যারা খুব শীঘ্রই দেশ থেকে অধিবাসন করার মাধ্যমে নিজের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়ন করতে চান এবং স্বপ্নের দেশ হিসেবে যদি বাহরাইন দেশটিকে বেছে নিয়ে থাকেন তাহলে তাহলে এই কন্টেন্টে আপনার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। যেহেতু আপনি বাহরাইন সম্পর্কে জানার জন্য এসেছেন তাই ইতিমধ্যে হয়তো আপনি এদের সম্পর্কে অনেক তথ্য জেনে গিয়েছেন। এরপরও আমরা আপনাকে এমন কিছু নতুন নতুন তথ্য দিবো যা বাহরাইন ফ্রি ভিসা পাওয়ার জন্য অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। তাহলে আসুন শুরুতেই বাহরাইন দেশটি সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেওয়া যাক।
বাহরাইন দেশটির মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত। দেশটি আয়তন অনেক ছোট হলেও মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশের তালিকার শীর্ষ দিকে অবস্থান। হয়তো অনেকেই জানেন না যে বাহরাইন দেশটিকে বলা হয় সৌদি আরবের ধনীদের জন্য লাস ভেগাস। বাহরাইন শব্দের অর্থ হলো দুটি সাগর। দেশটিতে মোট ৩৬ টি দ্বীপ রয়েছে।বাহারাই নিজে জনসংখ্যা রয়েছে তার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ মুসলমান। বাকি ৩০ শতাংশ মানুষের মধ্যে রয়েছে হিন্দু ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্মের। বাহরাইনের জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ হল প্রবাসী। প্রায় ২ লক্ষের উপরে বাংলাদেশী প্রবাসী রয়েছে বাহরাইনে। বাহরাইন দেশটির অর্থনীতির মূল অংশ হলো রপ্তানি এবং পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। বাহরাইনের এক দিরহাম সমান বাংলাদেশি প্রায় ২৭০ টাকা।
বাহরাইন ফ্রি ভিসা কি
ভিসা সংগ্রহ করে আপনি নানান ধরনের কাজ করতে পারবেন। এখন আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট অথবা ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে সেখানে যান তাহলে নির্দিষ্ট একটি কোম্পানি অথবা মালিকের আওতাধীন আপনাকে কাজ করতে হবে, কিন্তু আপনি যদি বাহরাইন ফ্রী ভিসা পান তাহলে সেখানে গিয়ে আপনি আপনার ইচ্ছামত কাজ করতে পারবেন। অর্থাৎ কোন মালিক বা কোম্পানির আয় তাদের না থেকে নিজের ইচ্ছামত কাজ করার স্বাধীনতাকেই বাহারাইন ফ্রি ভিসা বলা হয়।
অনেকেই রয়েছে যারা কিনা বাহারাইনে গিয়ে অনেক কোম্পানি এবং মালিকের কাজ করতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হয়। যদিও বাহরাইনের মানুষ অতিথি আপ্যায়নে অনেক সেরা তারপরও কিছু মানুষ রয়েছে যারা প্রবাসীদের কে অত্যাচার করে। তাই অনেক বাঙালি শ্রমিক সেখানে গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানিতে অনেক কষ্টকর জীবন যাপন কাটানো শুরু করে। যার কারণে আপনি যদি ফ্রি ভিসা সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে সেখানে গিয়ে আপনার ইচ্ছামত যে কোন জায়গায় কাজ করতে পারবেন।
বাহরাইন ফ্রি ভিসা কিভাবে পাবেন
বাহরাইন ফ্রি ভিসা কিভাবে পাবেন এই প্রশ্নের উত্তরটা অনেক কঠিন, শুনতে অবাক লাগলে এটাই সত্য যে দীর্ঘদিন ধরে বাহরাইনের সকল প্রকার ভিসা বন্ধ রয়েছে। যদিও খুশির খবর যে খুব শীঘ্রই বাহরাইনে ভিজিট ভিসা চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। আশা করা যায় খুব শীঘ্রই বাহরাইনে ভিজিট ভিসা চালু হয়ে যাবে। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসছে তাহলে কি আমি বাহরাইন ফ্রি ভিসার সংগ্রহ করতে পারবো না? হ্যাঁ অবশ্যই পারবেন সে ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম এবং একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
বাহরাইন ফ্রি ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে এমন একটি দেশে যেতে হবে যেখান থেকে ভিসা সংগ্রহ করা যায়। সেখানে গিয়ে বেশ কিছুদিন অবস্থান করার পর সেখান থেকে বাহরাইন যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি যেতে পারেন কাতার কুয়েত অথবা সবচাইতে ভালো হয় দুবাই। দুবাই থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশী মানুষ বাহরাইন যাচ্ছে। তাই বাহরাইন ফ্রী ভিসা পাওয়ার জন্য বর্তমানে আপনাকে অবশ্যই অন্য একটি দেশের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে।
বাহরাইন ফ্রি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ফ্রি ভিসা নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে বেশ কিছু ডকুমেন্টসের প্রয়োজন হয়ে থাকে। আমাদের সকল ক্ষেত্রেই কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। সুতরাং আমাদের সকলের কাগজপত্র সম্পর্কে জানা উচিত। অনেক সময় ডকুমেন্টসের ভুলের কারণে আমরা ভিসা পায় না যে কারণে আমাদের ডকুমেন্টসের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী। ফ্রি ভিসার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন তার নিচে উল্লেখ করা হলো।
- প্রথমত আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হবে এবং পাসপোর্ট এর সর্বনিম্ন মেয়াদ থাকতে হবে ছয় মাস। ছয় মাসের কম মেয়াদ থাকলে আপনি সেই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে বাহরাইন যেতে পারবেন না।
- পাসপোর্টে দুইটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
- সদ্য তোলা ছবির প্রয়োজন হবে।
- এর আইডি কার্ড এর প্রয়োজন হবে অথবা জন্ম নিবন্ধন কার্ড এর প্রয়োজন হবে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হবে। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নাই এই কারণে যে আপনি কোন রকম অবৈধ কিছু সাথে যুক্ত আছেন কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য।
- মেডিকেল রিপোর্ট এ প্রয়োজন হয়।
- করোনার টিকা কার্ড এর প্রয়োজন হয়।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর প্রয়োজন হয়। যেই ব্যাংক এ আপনি লেনদেন করেন সেই ব্যাংকের লাস্ট ৬ মাসের স্টেটমেন্ট এর প্রয়োজন হবে।

বাহরাইন ফ্রি ভিসা কি পাওয়া যায়
বাহারাইন ফ্রি ভিসা সম্পর্কে যারা অনেকেই বেশ কিছু তথ্য জেনে গেছেন তাদের মনে এখন প্রশ্ন যে বাহরাইন ফ্রী ভিসাতে গিয়ে কি কি পাওয়া যায়, আসলে ফ্রি ভিসার মূল অর্থটা হলো আপনি সেখানে গিয়ে আপনার ইচ্ছামত যে কোন কোম্পানি অথবা মালিকাধীন কাজ করতে পারবেন। এটাই হচ্ছে সবথেকে বড় সুবিধা। এখন সেখানে গিয়ে আপনি যদি কোম্পানির কাজ করেন তাহলে কোম্পানি আপনাকে বাসস্থান দিবে কিন্তু খাবার সুবিধা দিবে না। অর্থাৎ সেখানে কোম্পানি এবং মালিকের সঙ্গে আপনি কি ধরনের চুক্তি করবেন সেটার উপরে নির্ভর করবে আপনি কি পাবেন আর কি পাবেন না।
বাহরাইন ফ্রী ভিসা প্রসেসিং
বাহরাইন ফ্রি ভিসা প্রসেস অন্যরকম । কারণ ইতিমধ্যে আপনারা জেনে গেছেন যে বাংলাদেশ থেকে বাহরাইনের কোন ধরনের ভিসা খোলা নেই, তাই বাংলাদেশ থেকে বাহরাইন যেতে হলে দ্বিতীয় কোন দেশে প্রবেশ করতে হয়। এবং সেই দেশ থেকে বাহরাইন ভিসা প্রসেসিং করতে হয়। এবং এর কারণে প্রথমে সেই দেশের ভিসা প্রসেসিং করতে হয়। আপনি যদি সেই দেশের সঠিকভাবে পৌঁছাতে পারেন এরপর সেই দেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে খুব সহজেই বাহরাইনের যেকোন ভিসা সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
বাহারাইন ফ্রি ভিসার দাম কত
বাহরাইন ফ্রী ভিসার দাম মূলত ৯ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেহেতু বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বাহরাইন ফ্রী ভিসায় যাওয়া যায় না এ কারণেই মূলত এতটা বেশি টাকা খরচ করতে হয়। অন্য কোন তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বাহরাইন যাওয়ার কারণে অনেক বেশি টাকা খরচ হয়। তবে আপনি যদি দালাল এবং প্রতারক চক্রের সঙ্গে যুক্তি না করে বাহরাইনে অবস্থিত কোন নিকটতম মানুষের সঙ্গে কথা বলেন সেক্ষেত্রে আরো অনেক টাকা কম লাগবে।
বাহরাইন ফ্রি ভিসা কিভাবে করে
অনেকে প্রশ্ন করেন বাংলাদেশ থেকে যেহেতু বাহরাইন সকল প্রকার ভিসা বন্ধ তাহলে কিভাবে মানুষ বানায় ফ্রী ভিসা তৈরি করে। আপনাদের প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে বাংলাদেশ থেকে বাহরাইনের সকল প্রকারভে সব বন্ধ থাকলেও কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে বাহরাইন ভিসা তৈরি করা সম্ভব। এর মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ একটি ব্যবস্থা হল অন্য একটি দেশের মাধ্যমে বাহরাইনে যাওয়া। এবং এভাবে প্রতি বছর প্রায় বিপুল পরিমাণ মানুষ অন্য দেশের মাধ্যমে বাহরাইন যাচ্ছে।

বাহরাইন ফ্যামিলি ভিসা
বাহরাইন এ ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে যাওয়া যায় সুতরাং আপনি চাইলেও বাহরাইন এ ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে যেতে পারেন। দীর্ঘ চার বছর পর বর্তমান সময়ে আপনি বাহরাইনে ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন। ফ্যামিলি ভিসার মাধ্যমে বাহরাইন গিয়ে আপনারা বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করতে পারবেন সেটা অনেকটা টুরিস্ট ভিসার মত। বাহরাইন ফ্যামিলি ভিসা ক্ষেত্রে আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভিসা পেয়ে যাবেন। ফ্যামিলি ভিসা পেতে সময় লাগবে প্রায় ১৫ কর্ম দিবসের মতো।
বাহরাইন ফ্যামিলি ভিসা সুযোগ সুবিধা
বর্তমান সময়ে ফ্যামিলির ভিসার সুযোগ সুবিধা নিয়ে ততটা বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন ভিসা বন্ধ থাকার কারণে অনেকেই আপডেট তথ্য সম্পর্কে জানেন না। তবে বর্তমান সময়ে যেহেতু ভিসা চালু রয়েছে সুতরাং আপনারা চাইলে যেকোনো ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে বাহরাইন যেতে পারেন। সরাসরি বাংলাদেশ থেকে বাহরাইন যাওয়া যায় না যে কারণে আপনি ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে গেলেও আপনাকে অন্য দেশ হয়ে যেতে হবে। ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে গেলে আপনাকে সাপোর্ট করবেন এটি হচ্ছে আপনার একটি প্লাস পয়েন্ট।
বাহরাইন ভিসা সতর্কতা
আপনি যদি বাহারাইনে যেতে চান এবং আপনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কারণ আমাদের এই কন্টেনটি পরে আপনি ইতিমধ্যে জেনে গেছেন যে বাংলাদেশ থেকে বাহরাইনে কোন ধরনের ভিসা চালু নেই। যদিও কিছু উপায় এর মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষ দেশের মাধ্যমে বাহরাইন পৌঁছানো সম্ভব। তারপরও নানা ধরনের প্রক্রিয়াকরণের কথা বলে কিছু প্রতারক চক্র এবং দালাল চক্রগুলো আপনাকে অতিরিক্ত বেতনের লোক দেখিয়ে আপনার থেকে অর্থের চুক্তি করতে চাইবে। যারা আপনাকে এ ধরনের প্রলোভন দেখাবে তাদের থেকে অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে। আপনি যদি সত্যি বাহরাইন যেতে চান সে ক্ষেত্রে প্রথমে দুবাইয়ে যেতে পারেন। এবং দুবাই থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন বাহরাইন ভিসা। তাই দালাল বা প্রতরক চক্রের সঙ্গে কোন ধরনের চুক্তি করার প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশ থেকেই ইতালি যাওয়ার উপায় ২০২৩ ( সরকারি ও বেসরকারি ভাবে )