পাসপোর্ট করার নিয়ম। পাসপোর্ট একটি ফারসি শব্দ। পাসপোর্ট শব্দটি উৎপত্তি ফারসি ভাষা থেকে।বৈধভাবে যে কোন দেশে যেতে চাইলে প্রথমে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো পাসপোর্ট ।পাসপোর্ট ছাড়া আপনি কোন দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন না ।ভ্রমণের জন্য পাসপোর্ট হলো একটি জরুরী সনদ।
তাই পাসপোর্ট করার নিয়ম ওপাসপোর্ট করতে যা যা লাগে তা সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা উচিত।পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে বা যেকোন দেশে একজন ব্যক্তির নাগরিকত্ব পরিচয় থাকে।এর স্বীকৃতি পরিচয় বহন করে পাসপোর্ট। পাসপোর্ট ছাড়া কোন দেশে যদি আপনি প্রবেশ করেন তবে তা অনুপ্রবেশ হিসেবে গণ্য করা হবে।
আপনি নদী,রেল বা বিমান পথে যে পথে হোক না কেন। নিচে অনলাইনে পাসপোর্ট করার নিয়ম গুলো জেনে নেই।
পাসপোর্ট কি জেনে নিই
পাসপোর্ট হল এক দেশের নাগরিক অন্য দেশ অথবা বিদেশে ভ্রমণ এর একটি অফিশিয়াল দলিল।জন্ম বা অভিবাসন সূত্রে প্রতিটি দেশের সরকার সে দেশের নাগরিকদের জন্ম সনদ/ আইডি কার্ড দিয়ে থাকেন।ঠিক তেমনি পসপোর্ট হলো অন্য দেশ ভ্রমনের জন্য সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সনদ।
এক দেশ হতে অন্য দেশে যাবার জন্য যেমন পাসপোর্ট প্রয়োজন। ঠিক তেমনই বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করতে হলেও পাসপোর্ট প্রয়োজন।বাংলাদেশের পাসপোর্ট পাসপোর্ট অফিসে বা বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে পাসপোর্ট দেওয়া হয়ে থাকে।আকারে ছোট একটি বই যাতে আপনার ও আপনার দেশের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য থাকে। এবং বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি তথ্য উল্লেখ থাকে।
*বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে ইসরাইল ব্যতীত অন্য সকল দেশে ভ্রমণ করা যায়। কারণ ইসরাইলের সাথে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। নিচে পাসপোর্ট করার নিয়ম জেনে নিই।
পাসপোর্ট এর প্রকারভেদ
পাসপোর্ট করার নিয়ম মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে:-
১. হাতে লেখা পাসপোর্ট ।
২. মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ।
৩. ই-পাসপোর্ট।
হাতে লেখা পাসপোর্ট
হাতে লিখা পাসপোর্ট অনেকটা পুরনো সময়ের।বলা যায় কিছু কিছু দেশে যদিও এখনো হাতে লেখা পাসপোর্ট এর প্রচলন আছে। তবে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর 2015 সাল থেকে জানুয়ারি মাসের পর থেকে আর কোন হাতে লেখা পাসপোর্ট ইস্যু করা হচ্ছে না
এর বদলে নিয়ে এসেছে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট হাতে লেখা পাসপোর্ট যদি থাকে তবে তা নবায়ন করে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করা হচ্ছে।
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম/মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট হলো এমন একটি পাসপোর্ট যা একটি নির্দিষ্ট যন্ত্র বা মেশিন দ্বারা সনাক্ত করা হয়।
এই পাসপোর্ট এর সকল তথ্য এমনভাবে থাকে যা ওই মেশিন দ্বারা সনাক্ত করতে পারা যায়।
বাংলাদেশ সরকার কাজের দ্রুত গতির জন্য 2010 সাল থেকে বাংলাদেশ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট দেওয়া শুরু করেছে।এই পাসপোর্ট এর কোথাও ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য থাকে না ।
এর পরিবর্তে পাসপোর্ট এর পরিচিতি পাতার একটি বিশেষ অংশে সংকেত এর মত থাকে যা দেখে কিছু বোঝা যায় না।
এই অংশে তথ্যগুলো জমা করা থাকে। ইমিগ্রেশন অফিসার রা যন্ত্রের সাহায্যে তথ্যবলি এবং ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেন।
এরফলে ভুয়া পাসপোর্ট জনিত অপরাধ অনেকাংশেই কম হয়।এম আর পি পাসপোর্ট ধারীরা স্বাভাবিকভাবেই দেশ বিদেশে যেতে বা ভ্রমণ করতে পারেন কোন ঝামেলা ছাড়াই।
পাসপোর্ট আবেদন এর ধরন ও পাসপোর্ট করার নিয়ম
বাংলাদেশ পাসপোর্ট করার নিয়ম/আবেদন সাধারণত দুই ধরনের হয়।এই আবেদন এর ধরনের ওপর পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ নির্ভর করে
১. সাধারণ
২. এবং জটিল
সাধারণ পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ফি দিতে হয় 4,025 টাকা 21 কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার তারিখ দিয়ে থাকে।
যদিও নিজে করলে 21 দিনে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে সাধারণত 40 থেকে 45 দিনের মতো সময় লাগে এর আগেও অনেকে পেয়ে যান ভাগ্য ভালো হলে।
জরুরি পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ফি দিতে হয় 8625 টাকা দুই কর্মদিবসের মধ্যে সুপার এক্সপ্রেস এর মাধ্যমে পাওয়ার দিন দিয়ে থাকে ।
যদিও নিজে করলে 15 থেকে 20 দিনের মতো সময় লেগে যায়।
পাসপোর্ট করার ধাপসমূহ
পাসপোর্ট করতে হলে অফিসিয়াল কিছু নিয়মাবলী এবং ধাপ মেনে এগুতে হয়। সেগুলা হলো:-
1. আবেদন ফি জমা দেয়া
2. প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংগ্রহ
3. অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ
4. পাসপোর্ট ফরম এবং সংযুক্তি সত্যায়িত করা
5. আবেদন ফরম পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া
6. পুলিশ ভেরিফিকেশন
7. পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক করা
8. পাসপোর্ট সংগ্রহ করা
পাসপোর্ট আবেদন ফি জমা দেওয়া
পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করার পর আপনি দুই উপায় পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন।
1. ব্যাংকে পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়া
2. চালানের মাধ্যমে নিজে জমা দেওয়া
ব্যাংকে পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়া
আপনার আশেপাশের প্রায় সব ব্যাংকেই চালানের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর টাকা বা ফি জমা দিতে পারবেন। তবে সব ব্যাংকে পাসপোর্টের ফি নাও নিতে পারে ।তাই আগে জেনে নিন আপনার সুবিধাজনক কোন ব্যাংকটি পাসপোর্ট ফি জমা নেয় ।তারপর নিচের ডকুমেন্টগুলো সঙ্গে নিয়ে ফি জমা দিন।
- এন আই ডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদ যা দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করেছেন
- অ্যাপ্লিকেশন সামারি পেইজ
- আর ব্যাংকে একটা ফোন দিবে পূরণ করতে সেটি
চালানের মাধ্যমে নিজে জমা দেওয়া
এছাড়া আপনি চাইলে রকেট বিকাশ ডিবিবিএল নেক্সাস বা অন্যান্য ব্যাংকের ভিসা ও মাস্টার কার্ড দিয়ে অনলাইনে চালানের অ্যাপে পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে https://www.epassport.gov.bd/ এই লিংকে গিয়ে পাসপোর্ট ফি সিলেক্ট করুন।
আবেদনের প্রকৃতি ও বিতরণের প্রকৃতি সিলেক্ট করে পছন্দমত ব্যাংকের গেটওয় সিলেক্ট করে ফি জমা দিতে পারবেন ।এই সাইটে রেজিস্ট্রেশন এর দরকার হয় না
এইভাবে মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে ফি জমা দিতে পারবেন।অ্যাপ ডাউনলোড করুন অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস অ্যাপ এর রেজিস্ট্রেশন করে পাসপোর্ট ফি সিলেক্ট করুন। এনআইডি নাম্বার দিন অটো নাম ও ঠিকানা সার্ভার থেকে চলে আসবে ।
এবং শেষের দিকে পেমেন্ট অপশন পাবেন। দুই ভাবেই পেমেন্ট সম্পন্ন হলে চালান ডাউনলোড করতে পারবেন ।চালান ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে হবে চালান চাইলে ভেরিফি করতে পারেন এই সাইট থেকে।
সতর্কতাঃ
1.পাসপোর্ট আবেদনকারীর নাম ও চালানের নাম একই দিতে হবে না হলে আবেদন নিবে না
২.চালানে ডট থাকা বা না থাকায় কোনো সমস্যা হবে না
3.এ চালানে পেমেন্ট ফেল হতে পারে মানে টাকা কাটবে কিন্তু চালান আসবে না এমন হতে পারে।
ধরন অনুযায়ী পাসপোর্ট এর ফি সমূহ।
৪৮ পাতার ৫ বছর মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট
পাসপোর্টের ধরণ | কর্মদিবস | টাকা |
সাধারণ পাসপোর্ট | ১৫ | ৪,০২৫ টাকা |
জরুরী পাসপোর্ট | ৭ | ৬,৩২৫ টাকা |
অতি জরুরী পাসপোর্ট | ২ | ৮,৬২৫ টাকা |
৪৮ পাতার ১০ বছর মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট
পাসপোর্টের ধরণ | কর্মদিবস | টাকা |
সাধারণ পাসপোর্ট | ১৫ | ৫,৭৫০ টাকা |
জরুরী পাসপোর্ট | ৭ | ৮,০৫০ টাকা |
অতি জরুরী পাসপোর্ট | ২ | ১০,৩৫০ টাকা |
৬৪ পাতার ৫ বছর মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট
পাসপোর্টের ধরণ | কর্মদিবস | |
সাধারণ পাসপোর্ট | ১৫ | ৬,৩২৫ টাকা |
জরুরী পাসপোর্ট | ৭ | ৮,৬২৫ টাকা |
অতি জরুরী পাসপোর্ট | ২ | ১২,০৭৫ টাকা |
৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট
পাসপোর্টের ধরণ | কর্মদিবস | |
সাধারণ পাসপোর্ট | ১৫ | ৮,০৫০ টাকা |
জরুরী পাসপোর্ট | ৭ | ১০,৩৫০ টাকা |
অতি জরুরী পাসপোর্ট | ২ | ১৩,৮০০ টাকা |
পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করা
পাসপোর্ট করার নিয়ম এর মধ্যে আবেদনের স্বপক্ষে কিছু দলিল বা কাগজপত্র জমা দিতে হয়। চলুন জেনে নেই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।
- অনলাইনে পূরণকৃত পাসপোর্ট ফরম – ২ কপি
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজ ছবি – ২ কপি
- ন্যাশনাল আইডি কার্ড/স্মার্ট কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধন এর সত্যায়িত ফটোকপি।
- ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, গাড়িচালক ও অন্যান্য পেশার লোকদের ক্ষেত্রে পেশাগত সনদের সত্যায়িত ফটোকপি।
- সরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য No Objection Certificate (NOC) বা Government Order(GO) সরকারি আদেশ দিতে হয়।
- নাগরিক সনদপত্র (আসল বা সত্যায়িত ফটোকপি)।
- আবেদন পত্র জমা দেয়ার সময় সকল কাগজের মূল কপি সাথে রাখলে ভালো। অনেকসময় আবেদন গ্রহনের সময় এটা দেখতে চাওয়া হয়।
অনলাইনে পাসপোর্ট করার নিয়ম ও আবেদন ফরম
পাসপোর্টের আবেদন ফরম অনলাইন ও অফলাইন দুই ভাবে পূরণ করা যায়।
অফলাইন পাসপোর্ট আবেদন ফরম
অফলাইনে পাসপোর্টের আবেদন ফরম পূরণ করতে হলে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পাসপোর্ট এর ফরম চাইলে অফিস থেকে বিনামূল্যে দেওয়া হয়।পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ডাউনলোড ফ্রম অপশন এ গিয়ে ফর্মাল ওপেন করে পিডিএফ ফরমেটে ডাউনলোড করে।
হাতে লিখা ফরম পূরণ করা হয় বলে কয়েক কপি ফটোকপি করে রাখা ভালো এতে লেখায় ভুল হলে তা সুন্দর করে আবার লেখা যায়।
অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম
পাসপোর্ট করার নিয়ম।পাসপোর্ট ফরম পুরন করার জন্য প্রথমেই এই লিংকে যান। লিংকে গিয়ে আপনার বর্তমান ঠিকানার জেলা ও পুলিশ স্টেশন সিলেক্ট করে ইমেইল ও ফোন নাম্বার দিন। ও রেজিস্টেশন করে নিন। এরপর ধাপে ধাপে খুব সতর্কতার সাথে আবেদন ফরম পুরন করুন।
ফরম পুরন করার সময় পাসপোর্ট করার নিয়ম এর যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন
- আপনার নামে যদি শুধু একটা অংশ থাকে তবে শুধু Surname অংশ পুরন করুন। একাধিক অংশ থাকলে Given name ও Surname উভয় অংশে ভাগ করে দিন পুরো নাম।
- কোন অবস্থাতেই কোন নামে ডট (.), কমা (,), হাইফেন (-) দিবেন না। আপনার সার্টিফিকেট, NID বা জন্ম নিবন্ধন যেখানেই থাকুক না কেন।দিলেই বরং অনাকাংখিত ঝামেলা হতে পারে।
- ই-পাসপোর্ট আবেদনের সময় শুধুমাত্র আপনার NID বা জন্ম নিবন্ধনে যেভাবে নাম আছে হুবুহ সেভাবেই (ডট বাদে) আবেদন করতে হবে। তাই দরকার হলে আপনাকে আগে আপনার NID বা জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে নিতে হবে।
- ঠিকানা পুরনের সময় পূর্নাংগ ঠিকানা দিন। শহরের হোল্ডীং সহ ঠিকানা হলে City/Village/House ও Road/Block/Sector (optional) এই দুইটা ফিল্ডই ব্যবহার করুন। গ্রামে হলে শুধু City/Village/House এ গ্রামের নাম দিলেই হয়, Road/Block/Sector (optional) যেহেতু থাকে না তাই এটা অপশনাল।
- স্থায়ী ঠিকানা ওইটাই দিবেন যেটাতে আপনার বা আপনার বাবার স্থায়ী ঠিকানা আছে। এর প্রমাণে পুলিশ ভেরিফিকেশনে জমি বা ফ্ল্যাটের দলিল লাগতে পারে।
- আগের কোন পাসপোর্ট থাকলে ID Documents সেকশনে অবশ্যই সেটা সিলেক্ট করবেন ও সেই পাসপোর্ট এর তথ্য দিবেন।
- এখন ID Documents সেকশনে সতর্কথার সাথে আপনার NID বা জন্ম নিবন্ধনের নাম্বার দিবেন (যেটা দিয়ে আবেদন করবেন)।
- Parental information এ বাবা মায়ের নাম দিবেন। তাদের National ID নাম্বার না দিলেও সমস্যা নাই।
- Guardian information শুধু যাদের দরকার তাদের দিবেন। এতা শুধু তাদের জন্য যাদের লিগ্যাল গার্ডিয়ান আছে। বাকিরা এটাতে কিছুই পুরন করবেন না।
- Spouse Information এ ম্যারিড দিলে কাবিননামা দিতে হবে ও স্পাউজ এর নাম ও অন্যান্য তথ্য দিতে হবে।
- Emergency contact এ আপনি যেকোন নাম দিতে পারেন এতে কোন ভেরিফিকেশন বা সমস্যা হবে না। এটা সাধারণত দেয়া হয় ইমার্জেন্সিতে দেশে কার সাথে যোগাযোগ করতে হবে সেজন্য।
- Passport options এ আপনি আবেদনের ধরন ও পৃষ্ঠা সংখ্যা সিলেক্ট করবেন ও সে অনুযায়ী পাস্পোর্ট ফি দেখাবে।
অনলাইনে পাসপোর্ট আরো বিস্তারিত তথ্য
Delivery Options & Appointment এ আপনাকে দেখাবে, আপনি যে কেন্দ্রে আবেদন করবেন। সেখানে কোন এপয়েনমেন্ট লাগে কিনা? সাধারণত ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে এপয়েনমেন্ট লাগে না। আর ঢাকার কেন্দ্রগুলোতে এপয়েনমেন্ট লাগে।এখন নিয়মিত আবেদনে ২ মাসের মাঝেও ডেট পাওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে জরুরি সিলেক্ট করে দেখুন আগে পান কিনা। তাও না পেলে ও আপনার দ্রুত লাগলে জরুরি বা Express আবেদন সিলেক্ট করে আবেদন সাবিমিট করুন আর ব্যাংকে অতিব জরুরি/Super Express ফি প্রদান করুন।এতে আপনি কোন এপয়েনমেন্ট ছাড়াই যেকোনদিন আবেদন জমা দিতে পারবেন।
শেষ ধাপে আপনাকে একটা সামারি দেখাবে যে আপনি আবেদন চেক করে দেখুন কোন ভুল আছে কিনা। সব কয়েকবার চেক করে দেখুন ঠিক আছে কিনা। সব ঠিক থাকলে সাবমিট করে দিন। একবার সাবমিট করলে আপনি আর এডিট করতে পারবেন না।
এখন আপনি সামারি প্রিন্ট করতে পারবেন ও ফর্ম ডাউনলোড করতে পারেন।
সবশেষে এপ্লিকেশন ফরমের শেষ পাতায় আপনার স্বাক্ষর ও তারিখ দিন।
পাসপোর্ট করার নিয়ম কাগজ পত্র সত্যায়িত
ফরম সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে এরপরের ধাপ সেগুলো সত্যায়িত করা।
দুই সেট আবেদন ফরম এর সাথে জন্ম নিবন্ধন অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র নাগরিক সনদের ফটোকপি দিয়ে লাগিয়ে নিতে হবে। এখন ফরমটি দুটি পাসপোর্ট অফিসের যে কার কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিতে হবে।
যে সকল ব্যক্তি পাসপোর্ট ফরম ও কাগজ সত্যায়িত করতে পারবেন তারা হলেন:
সংসদ সদস্য সিটি কর্পোরেশনের মেয়র/ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলরগণ/গেজেটেড কর্মকর্তা গণ।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক/ উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান/ পৌরসভার মেয়র/ পৌর কাউন্সিলর/ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক /বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ /জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক গ্রেজেডেট কর্মকর্তাগণ।
পাসপোর্ট আবেদন ফরম ডাউনলোড
ওয়েবসাইট থেকে পাসপোর্ট আবেদন ফরম ডাউনলোড করা যাবে।আবেদন ফরম টি ডাউনলোড করার জন্য প্রথমে https://www.epassport.gov.bd/ ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ।নিচে মত আবেদন ফরম পাবেন।আবেদন ফরম টি ডাউনলোড করুন এবং প্রিন্ট করে নিন । অথবা নিচে থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।
এবার প্রিন্ট করার আবেদন ফর্মটি ফটোকপি করে নিয়ে সেই ফটোকপি তে আবেদন ফরম পূরণ করুন ।যদি কোন ভুল হয় তাহলে তা পুনরায় সংশোধন করে মূল আবেদনপত্রে তা পূরণ করতে পারবেন।
পাসপোর্ট হয়েছে কিনা
আপনার ই-পাসপোর্ট সকল কার্যক্রম শেষ হয়েছে? তাহলে আপনি আপনার পাসপোর্ট হয়েছে কিনা তা ঘরে বসে দেখতে পারবেন। পাসপোর্ট হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য আপনাকে ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে https://www.epassport.gov.bd/ লগ ইন করতে হবে।এরপর (check application status) এ ক্লিক করতে হবে ।
বায়োমেট্রিক দেওয়ার পর যে স্লিপটি দেওয়া হয়েছে । সেটি দিয়ে অ্যাপলিকেশন আইডি দিয়ে লগ ইন করে আপনার পাসপোর্ট হয়েছে কিনা তার স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।
পুলিশ ভেরিফিকেশন
আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য ডাকা হয়। পাসপোর্ট করার নিয়ম এর একটি হলো এটি। পুলিশ পাসপোর্ট আবেদন কারীদের বাড়িতে গিয়ে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে অথবা আবেদনকারীকে তাদের অফিসে যেতে বলতে পারে।
এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে কিছু ডকুমেন্ট তৈরি রাখতে বলা হয়। যেমন জায়গা/ জমির কাগজ, বিলের কাগজ ইত্যাদি ব্যক্তিভেদে একেক জনের কাছে একটা চাওয়া হয়। ভেরিফিকেশন এর সময় পাসপোর্ট আবেদন ফরমে যদি স্থায়ী ও ঠিকানা বর্তমান ঠিকানা ভিন্ন হয় তাহলে দুই জায়গাতেই ভেরিফিকেশন করা হয়।
আর একই ঠিকানা হলে এক জায়গাতেই হয়।এবার আপনার অফিসিয়াল কাজ সব শেষ শুধু পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষা।
কিভাবে পাসপোর্ট সংগ্রহ করবেন বা পাবেন
সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবার পরে আপনার পাসপোর্ট এর ধরন অনুযায়ী ৭ দিন অথবা২১/ 30 দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।পাসপোর্ট তৈরি হলে আপনাকে মোবাইলে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
তাছাড়া অনলাইনে স্ট্যাটাস চেক করেও আপনি জানতে পারবেন।পাসপোর্ট করার নিয়ম কিংবা পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এসব নিয়ে পরিপূর্ণ ধারণা দিতে এই আর্টিকেল ।এছাড়া পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে কিংবা কোন ভুল হলে তা সংশোধনের উপায় জানুন।
পরিশেষ
আপনি যদি পাসপোর্ট করতে চান বা পাসপোর্ট করার নিয়ম জানতে চান? তাহলে এই পোস্টটি আপনার উপকারে আসবে এবং উপরের নিয়মগুলো অনুসরণ করে খুব সহজে অনলাইনে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন পাসপোর্ট করার নিয়ম সহ পাসপোর্টের আবেদন ফরম পাবেন এবং পাসপোর্ট চেক করতে পারবেন।